বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন

পল্লী কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (পিকেডিসি)

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

জৈব-কৃষি নীতি

৩.১. প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে ভূমির উর্বরতা সংরক্ষণ :
৩.১.১ মৃত্তিকাস্থ জৈব পদার্থ ও অনুজীব সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং ন্যূনতম কর্ষণ পদ্ধতি অনুসরণে উৎসাহিত করা হবে;
৩.১.২ কৃষক পর্যায়ে কম্পোস্ট, অনুজীব ও অন্যান্য জৈব সার উৎপাদন এবং সম্প্রসারণের ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং উৎপাদিত সারসমূহের গুণগত মান পরীক্ষার ব্যবস্থা সহজতর করা হবে; ৩.১.৩ খামার জাত সার, পোল্ট্রী ম্যানিউর, শহর ও পল্লীর কম্পোস্ট এবং বায়োস্নারী ব্যবহারের মাধ্যমে মাটিতে জৈব পদার্থ বৃদ্ধির কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া হবে; ৩.১.4 শস্য অবশিষ্টাংশ পুনঃচক্রায়নের মাধ্যমে মাটির সাথে মিশ্রণকে উৎসাহিত করা হবে; এবং ৩.১.৫ মৃত্তিকার পুষ্টি উপাদানের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সবুজ সার ও ডাল জাতীয় ফসলের সমন্বয়ে উপযুক্ত শস্য পর্যায় অনুসরণের জন্য সচেতন করা হবে।
৩.২ রোগ ও পোকামাকড় ব্যবস্থাপনায় পরিবেশ-বান্ধব পদ্ধতি গ্রহণ :
৩.২.১ ফসলের বপন ও উত্তোলন সময় পরিবর্তন, আলোক ফাঁদ, ফাঁদ শস্যের ও প্রতিরোধী জাত ব্যবহার এবং সেক্স ফেরোমোন ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমে বালাই দমনকে উৎসাহিত করা হবে; ৩.২.২ বিভিন্ন রকম উপকারী পোকার লালন ও কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে; ৩ ৩.২.৩ দেশে জৈব কৃষির জন্য অনুমোদিত কার্যকরী অনুজীব (Effective Micro Organism, EMO) এর উৎপাদন ও বিদেশ হতে জৈব বালাইনাশক আমদানির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে; ৩.২.৪ বিভিন্ন উদ্ভিদজাত উপদ্রব্য ও দেশীয় অক্ষতিকর কাঁচামালের সমন্বয়ে স্থানীয় পর্যায়ে জৈব বালাইনাশক তৈরি ও ব্যবহারকে উৎসাহিত করা হবে; এবং
৩.২.৫ বিভিন্ন পোকা দ্বারা রোগের আক্রমণ সম্পর্কে আগাম সতর্কীকরণ ও করণীয় বিষয়ে ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। 3.3 জৈবিক ও যান্ত্রিক পদ্ধতিতে আগাছা দমন : ৩.৩.১ জৈবিক অনুজীব ও প্রাকৃতিক শত্রু (Natural enemy) ব্যবহারের মাধ্যমে আগাছা দমনকে অনুপ্রাণিত করা হবে; ৩.৩.২ পরিচর্যা পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে আগাছা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা হবে; ৩.৩.৩ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ জাবড়া (Mulch) ব্যবহারকে উৎসাহিত করা হবে; এবং ৩.৩.৪ আগাছা প্রতিরোধী/সহনশীল জাত উদ্ভাবনে প্রয়াস নেয়া হবে ।
৩.৪ পরিবেশ বান্ধব ও দূষণমুক্ত সেচ ব্যবস্থাপনা :
৩.৪.১ সেচের জন্য দূষণমুক্ত পানি সম্পদ ব্যবহারের দক্ষতার প্রতি অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করা হবে; পানির সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য আধুনিক সেচ ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তির বিস্তারকে উৎসাহিত করা হবে; ৩.৪.২ জলাধার নির্মাণ ও সংস্কারের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি, বন্যার পানি সংরক্ষণ করতঃ সেচ কার্যে ব্যবহারকে সরকার উৎসাহ ও প্রণোদনা প্রদান করবে এবং এভাবে ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমিয়ে আনা হবে; ৩.৪.৩ নবায়নযোগ্য শক্তিকে সেচ কাজে ব্যবহারের উদ্যেগ নেয়া হবে; ৩.৪.৪ সেচ এর জন্য পানির উৎস দূষণকারী বস্তুর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি শক্তিশালী করা হবে; এবং
৩.৪.৫ ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ/সবজি বাগান কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা হবে।
৩.৫ উপযোগী স্থান ও অঞ্চল নির্বাচন :
৩.৫.১ যে সমস্ত এলাকায় রাসায়নিক সারের ব্যবহার সর্বনিম্ন কিংবা আদৌ ব্যবহার হয়নি, সেসব অঞ্চলে প্রথমে জৈব চাষাবাদের জন্য উৎসাহ প্রদান করা হবে এবং পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য অঞ্চলে জৈব চাষাবাদের জন্য উৎসাহ প্রদান করা হবে।
৩.৫.২ পাহাড়ী এলাকায় জৈব চাষাবাদকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে; এবং
৩.৫.৩ চরাঞ্চল, দ্বীপাঞ্চল, বসত ভিটা ও অন্যান্য বিশেষ এলাকা যা জৈব কৃষির আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে সাংঘর্ষিক নয়, এমন এলাকায়ও জৈব চাষাবাদ কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা হবে।
৩.৬ ফসল নির্বাচন :
৩.৬.১ বাংলাদেশে প্রচলিত সম্ভাবনাময় সকল ফসলকে জৈব-চাষে উৎসাহিত করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে শাক-সবজি, ফল-মূল, আলু, সুগন্ধি ও সরু চাউল, ডাল, গম, ভূট্টা, চা, ইক্ষু ও ফুল জৈব চাষাবাদের আওতায় আনার জন্য অগ্রাধিকার দেয়া হবে এবং পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ফসলকে জৈব চাষের আওতায় আনা হবে।
৩.৬.২ বন্য মধু, মোম ও বাঁশকে জৈব চাষাবাদের আওতায় সংগ্রহের উদ্যোগকে উৎসাহ প্রদান করা হবে।
৩.৭ শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণ :
৩.৭.১ শিক্ষা ব্যবস্থায় জৈব-কৃষি সম্পর্কিত বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত করা হবে; ৩.৭.২ জৈব কৃষি সংক্রান্ত জ্ঞান সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ভাণ্ডার গঠনের উদ্যোগ নেয়া হবে;
৩.৭.৩ ফসলভিত্তিক জৈব কৃষি চাষাবাদ পদ্ধতি উদ্ভাবনের লক্ষ্যে গবেষণা পরিচালনা ও এর মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফল কৃষকদের মাঝে সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি জোরদার করা হবে; ৩.৭.৪ জৈব কৃষি সম্পর্কিত কর্মকান্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট গবেষক, সম্প্রসারণবিদ, কৃষক, রপ্তানিকারক, প্রক্রিয়াজাতকারী এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জৈব কৃষি প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে;
৩.৭.৫ জৈব-কৃষিভিত্তিক দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন কর্মসূচি চালু করা হবে; এবং ৩.৭.৬ জৈব কৃষি বিষয়ক সেমিনার, ওয়ার্কশপ আয়োজন এবং মাঠ প্রদর্শনীর মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টির ব্যবস্থা করা হবে।
৩.৮ সনাতন ও দেশজ (Traditional & Indigenous) জ্ঞানের সমন্বয় :
৩.৮.১ দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা সনাতন ও দেশজ (Traditional & Indigenous) প্রথা, ধারণা ও অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করা এবং তাদের মূল্যায়ন সাপেক্ষে জৈব ফসল উৎপাদনে সম্পৃক্তকরণকে উৎসাহিত করা হবে ।
৩.৯ কর্মসংস্থান :
৩.৯.১ কৃষক পর্যায়ে জৈব কৃষির বিভিন্ন উৎপাদন উপকরণ যেমন- জৈব সার, জৈব বালাইনাশক ও জৈব বীজ উৎপাদনে সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের আয় বৃদ্ধি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ব্যবস্থা করা হবে;
৩.৯.২ স্থানীয় সম্পদ ও দেশজ জ্ঞানের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে অধিক মূল্যের জৈব দ্রব্য উৎপাদনে প্রান্তিক কৃষকদের সহযোগিতা করা হবে; এবং
৩.৯.৩ মৌমাছি পালনের মাধ্যমে জৈব মধু উৎপাদনে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
৩.১০ সমবায় সমিতি :
৩.১০.১ জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে জৈব কৃষক ও উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে সমিতি প্রতিষ্ঠা করা;
৩.১০.২ জৈব পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে চুক্তিবদ্ধ বা দলীয় উৎপাদন ব্যবস্থাকে গুরুত্ব প্রদান করা; এবং
৩.১০.৩ জৈব বীজ সংরক্ষণের জন্য গোষ্ঠীভিত্তিক বীজ ব্যাংক (Seed Bank) প্রতিষ্ঠা করা হবে। ৩.১১ সহায়তা :
৩.১১.১ জাতীয় কৃষি নীতি ২০১৩ এ “কৃষি বিপণন” উপখাতে বর্ণিত কৃষকদের জন্য প্রযোজ্য সুবিধাসমূহ জৈব কৃষকদের জন্যও প্রযোজ্য বলে বিবেচ্য হবে; এবং
৩.১১.২ জৈব সার, জৈব বালাইনাশক উৎপাদন ও জৈব কৃষিখাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে ।
৩.১২ অভ্যন্তরীণ বাজার উন্নয়ন :
৩.১২.১ বাজার গবেষণা ও ব্যবসা নির্দেশিকার মাধ্যমে কৃষক এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদেরকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে জৈব কৃষি পণ্যের বাজার উন্নয়নে সহযোগিতা করা হবে;
৩.১২.২ দেশে উৎপাদিত জৈব পণ্য বিভিন্ন শহরে বিদ্যমান চেইন শপে পারস্পরিক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাজারজাতকরণের উদ্যোগ নেয়া হবে; এবং
৩.১২.৩ অংশগ্রহণমূলক গ্যারান্টি সিস্টেমস (Participatory Guarantee Systems) প্রবর্তনে সহযোগিতা করা হবে।

৩.১৩ রপ্তানি বাজার :
৩,১৩,১ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন জৈব পণ্য মেলা/বাণিজ্য প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাজার অনুসন্ধান ও ব্যবসায়ীদের সাথে সুদৃঢ় বন্ধন তৈরি করতে সহযোগিতা করা হবে;
৩.১৩.২ রপ্তানি বাজারে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা অর্জনে দলীয় সনদের (Group Certification) ব্যবস্থা করা হবে; এবং
৩.১৩.৩ বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের জৈব কৃষি পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিকরণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা অর্জনে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হবে ।

মাননীয় উপদেষ্টা

2024-11-11-04-52-9c695fa39ec14a39a1d8e7b566bc18b1

জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া

মহাপরিচালক

মোঃ আব্দুল গণি

মোঃ আব্দুল গণি

সকল লিংক

কেন্দ্রীয় ই-সেবা

গুরুত্বপূর্ণ লিংক

সকল লিংক

সেবা সহজিকরণ

জাতীয় সংগীত

সামাজিক যোগাযোগ

ইনোভেশন কর্নার

সরকারি অফিসের নতুন ওয়েবসাইটের আবেদন

জরুরি হেল্পলাইন নম্বর